আজ ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২রা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

চাকুরীর লোভ দেখিয়ে বিদেশে নিয়ে তরুণীকে ধর্ষণ

দুবাইতে ড্যান্স বারে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে হোটেলগুলোতে নিয়ে বাধ্য করা হতো দেহ ব্যবসায়, রাজি না হলেই মাসের পর মাস চলতো নির্যাতন। এমন আরও লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন দুবাইয়ের বিভিন্ন হোটেল থেকে উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশি তরুণীরা।

জানা গেছে, ঢাকায় একাধিক ড্যান্স শেখানোর প্রতিষ্ঠান রয়েছে একটি পাচার চক্রের। সেখান থেকেই ড্যান্স শেখানোর নামে মেয়েদের সংগ্রহ করে পাচার করা হয় দুবাইয়ে। পতিতাবৃত্তির বিনিময়ে বিপুল টাকা অর্জিত হলেও নির্যাতিতাদের অনেকের ভাগে তা জুটে না। কেউ কেউ মাস শেষে অল্প টাকা পান। এ রকম সহস্রাধিক তরুণীকে পাচার করেছে আজম খান চক্র।

এ চক্রটি দালালদের মাধ্যমে তরুণীদের প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে নিয়ে যায়। তারপরই তাদের জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। তেমনি নির্যাতনের শিকার এক তরুণী জানান, প্রতিবেশী এক নারীর মাধ্যমে টিএসসিতে পরিচয় হয় নির্মল দাস নামে এক যুবকের সঙ্গে। নির্মল তাকে জানান, দুবাইয়ে ভালো চাকরি আছে। বেতন হবে প্রায় অর্ধলাখ টাকা-এমন প্রলোভন দেখিয়ে ওই তরুণীকে নারায়ণগঞ্জের জালকুড়ি পাসপোর্ট অফিসে নিয়ে যান। সেখানে পাসপোর্ট করার জন্য আবেদন করা হয়। প্রায় দুই সপ্তাহ পর চাকরির আলোচনার কথা বলে নির্মল ফোনে ডেকে নিয়ে যায় শান্তিনগরে। সেখানে পরিচয় হয় নাজিম খানের সঙ্গে। আজম খানের ছোট ভাই নাজিম। গাড়িতে বসেই ওই তরুণীর সঙ্গে কথা বলেন সেদিন। 

তিনি ওই তরুণীকে জানান, দুবাইয়ে তাদের কয়েকটি হোটেল আছে। সেখানে কাজ করতে হবে। কাজ হচ্ছে গেস্টদের খাবার পরিবেশন করা। হোটেল ব্যবসা যাই হোক মাস শেষে নিয়মিত ৫০ হাজার টাকা পাবেন।

তার কিছুদিন পরে ফোনে নাজিম জানান, ২৩  ডিসেম্বর তার ফ্লাইট। বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে গাড়িতে পাসপোর্ট, ভিসা, বিমানের টিকিট দেয় নাজিম। ওই সময়ে ওই তরুণীর মায়ের বিকাশ নম্বরে দুই দফায় ৪০ হাজার টাকা পাঠান নাজিম। দুবাইয়ে নিয়ে যাওয়ার পর ওই তরুণীর কপালে জোটে বন্দি জীবন। রুমের বাইরে তালা। প্রয়োজন হলেই রুম খুলে ড্যান্সবারে নিয়ে যাওয়া হতো। সেখানে মদে বুঁদ হয়ে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে নাচতে হতো। তারপর যখন তখন রুমে পাঠানো হতো গেস্ট। কখনো কখনো এক হোটেল থেকে আরেক হোটেলে নিয়ে যাওয়া হতো। প্রতিটি হোটেল অন্তত ২০ জন করে তরুণী রয়েছেন এই চক্রের। তাদের প্রত্যেককে দিয়েই এ কাজ করানো হয়। যারা স্বতপ্রণোদিত হয়ে নাচ করে তাদের ভাগ্যে অল্প-স্বল্প টাকা জুটলেও বেশিরভাগ তরুণীকেই কোনো টাকা দেয়া হয় না। হোটেলগুলো পরিচালনা করতো আজম খান। বারে, লবিতে তার দেখা মিলতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর..

ফেসবুকে আমরা

Facebook Pagelike Widget