আজ ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

অপারেশনের পর রোগীর পেটে গজ রেখে সেলাই!

পেটের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি এক রোগী। চিকিৎসক অ্যাপেন্ডিসাইটের সমস্যা মনে করে পরীক্ষা ছাড়া অপারেশন করেন। পরে পেটের মধ্যে তুলা, গজ রেখেই সেলাই করে দেন। অপারেশেনের দুই মাস পরও তার ব্যথা কমেনি, বরং বেড়েছে। ব্যথা সহ্য করতে না পেরে আল্ট্রসনোগ্রাম করান তিনি। সেখানেই ধরা পড়ে পেটের ভেতর থাকা তুলা ও গজ। পরে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পুনরায় অপরারেশন করা হয়। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা রবিবার (৯ আগস্ট) কুমিল্লার আদালতে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ফেয়ার হসপিটালে এই ঘটনা ঘটে। ডা. মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন ও ডা. রাশেদ-উজ-জামান রাজিবকে আসামি করা হয়েছে মামলায়। রোগীর ভাই তানজিদ সাফি অন্তর বাদী হয়ে মামলাটি করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী জানা যায়, ১২ এপ্রিল রাতে বরুড়ার রাজাপুর গ্রামের কাশেম শফি উল্লার মেয়ে টে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। ওই দিন রাতে তাকে বরুড়া ফেয়ার হসপিটালে ভর্তি করা হয়। ১৩ এপ্রিল ডা. মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইনের তত্ত্বাবধানে ডা. রাশেদ-উজ-জামান রাজিব অপারেশন করেন। এ সময় পেটে গজ রেখে সেলাই করেন ডা. রাজিব। পরে রোগীর পেটে ব্যথা অনুভব হয়। ব্যথা কমাতে ডা. ইকবাল হাই পাওয়ার অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ লিখে দেন। এভাবে ৩ মাস চলার পরে রোগীর ব্যথা কমেনি। পরে রোগীর ভাই তানজিদ সাফি অন্তর তার বোনকে আলট্রাসনোগ্রাফি করান। পেটে অস্বাভাবিক কিছু লক্ষ্য করেন। ১৮ জুলাই কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডা. আজিজ উল্লাহ ও ডা. মাহমুদ রোগীকে পুনরায় অপারেশন করান।

অন্তর বলেন, ‘ডা. ইকবাল ও রাজিব আমার বোনের রোগ নির্ণয় ছাড়া অপরারেশন করে। পরে পেটে গজ রেখেই সেলাই করে। আবার ব্যথা হলে অ্যান্টিবায়োটিক প্রেস্ক্রাইব করেন। ৩ মাস এমন ওষুধ খাওয়ায় আমার বোনের অবস্থা আরও খারাপ হয়। সঠিক বিচার চাই। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’

অভিযোগের বিষয়ে ডা. মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন বলেন, অপরাশেনের দিন তিনি ছিলেন না। রোগী যে দিন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি গেছে সেদিনও তিনি ছিলেন না। তবে তিনি রোগীকে ওষুধ দিয়েছেন।

রোগীর অবস্থা না বুঝে কীভাবে ওষুধ দিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. ইকবাল জানান, ওই সময় রোগীর পিরিয়ডের সময় ছিল। পিরিয়ড হবে মনে করে ওষুধ দিয়েছি।

অপারেশন করিয়েছেন ডা. রাজিব। দু’জনের সমন্বয় ছাড়া অপারেশন কীভাবে হলো এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে ডা. রাজিব বলেন, ‘ঘটনা যেহেতু চার মাস অতিক্রান্ত হয়েছে, তাই আমি বিস্তারিত জেনেই কথা বলবো।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর..

ফেসবুকে আমরা

Facebook Pagelike Widget