আজ ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১লা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

মামুনুল হক স্বীকার করলেন ফোনালাপ তার, নেটিজেনদের যে প্রতিক্রিয়া: ঢাকার কণ্ঠ

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বৃহস্পতিবার ফেসবুক লাইভে এসে স্বীকার করেছেন, গত কয়েক দিনে ফাঁস হওয়া ব্যক্তিগত ফোনালাপগুলো তারই ছিল। একের পর এক তার ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর অনেকের সন্দেহ ছিল- এগুলো সত্যি তার কথোপকথন কি-না। না-কি কেউ এসব তৈরি করেছেন। তবে বৃহস্পতিবার মামুনুলের বক্তব্যের পর ফোনালাপ যে তারই সে বিষয়ে কোনো সংশয় থাকলো না।

সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে গত শনিবার এক নারীসহ অবরুদ্ধ হওয়ার ঘটনাসহ সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে আজ সোয়া তিনটার দিকে তিনি ফেসবুক লাইভে আসেন।

মামুনুল হক বলেন, ‘আমার স্ত্রীর সঙ্গে আমি কি কথা বলবো না বলবো সেটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার।। অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় এখানে আমার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। সেই ব্যক্তিগত আলাপচারিতা ও কথপোকথন জনসম্মুখে প্রকাশ করে আমার নাগরিক অধিকার, ধর্মীয় অধিকার ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। যারা আমার ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস করেছেন অনতিবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

তিনি আরও বলেন, যেভাবে একের পর এক মানুষের ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস করা হচ্ছে, এটি দেশের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না। তিনি বলেন, এই যে এতোগুলো ফোনালাপ ফাঁস করা হলো তাতে কি প্রমাণ মিলেছে যে সে আমার বিবাহিতা স্ত্রী নয়? বরং যতগুলো তথ্য প্রমাণ আপনারা ঘাঁটাঘাঁটি করেছেন, সবগুলোর মাধ্যমে এই কথাই দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়েছে যে, জান্নাত আরা ঝর্না আমার বিবাহিত স্ত্রী।

হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে, স্ত্রীকে খুশি করতে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সীমিত পরিসরে কোনও সত্যকে গোপন করারও অবকাশ রয়েছে।

কয়েকদিন ধরে ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত মাওলানা মামুনুল হক তার নিজের ব্যক্তিগত ভুলের জন্য হাতজোড় করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। বলেন, আমার অসাবধানতা এবং যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করার কারণে যে ক্ষতির সম্মুখীন ব্যক্তিগতভাবে হয়েছি, সেই জন্য আমি নিজেই মর্মাহত। আমার কারণে আজকে সেখানে অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের কাছে আমি হাতজোড় করে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

মামুনুল হকের সর্বশেষ এই লাইভ নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন নেটিজেনরা। পক্ষে-বিপক্ষে নানাজন নানা মন্তব্য করেছেন।

ফেসবুকে রাজু আখতার হুসাইন লিখেছেন, ‘‘ভূল স্বীকার করা অপরাধ নয়, গ্রহণযোগ্যতার নির্দশন, ধন্যবাদ মামুনুল হককে। যারা ব্যাক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস করে অপরাধ করেছেন তাদের বিচার হওয়া উচিৎ। কারো ব্যাক্তিগত বিষয়ে জনসমক্ষে প্রকাশ মানবাধিকার লঙ্ঘন।’’

এসএম আনাস হুসাইন লিখেছেন, ‘‘কল রেকর্ড ফাসের জন্য এবার একাত্তর টিভির ডিজিটাল আইনে মামলা হবে। মামুনুল তো সব শিকারই করে নিলো এবার। খেলা জমে গেছে। এবার আইন বুঝে কথা বলেন সবাই। কিছু দিনের মধ্যে দেখবেন সব দোষ বিএনপি আর জামাতের ঘাড়ে পরবে।’’

ফয়সাল চৌধুরী লিখেছেন, ‘‘আল্লাহর প্রকৃত বান্দারা কোনো ভুল করলে সেটার জন্য সর্বদা অনুতপ্ত থাকে। তারমানে এটা না যে রিসোর্টে উনি ফুর্তি করতে গেছে। আল্লাহ্ আপনাকে সাহায্য করুক।’’

মামুনুল হকের সমালোচনা করে মহি উদ্দিন আহমদ লিখেছেন, ‘‘প্রশ্নটা বিয়ে নিয়ে নয়, যে পরিবেশ পরিস্থিতিতে আপনি কথিত অবকাশ যাপনে গেলেন, সেটা নিয়ে প্রশ্ন! সতেরটাটা লাশের উপর দাড়িয়ে কিভাবে পরিবারের সব সদস্যদের না নিয়ে শুধু একজন নিয়ে অবকাশে গেলেন?আপনি যদি একজন সেকুলার নেতা হতেন, তাহলে প্রশ্ন উঠতোনা।কিন্তু আপনি একজন ধর্মীয় নেতা!আপনার ও বউ নিয়ে ঘুরতে অধিকার আছে, কিন্তু লাশের উপর দাড়িয়ে নয়। কওমীরা যে রাজনীতির মাঠে একেবারে শিশু, সেটা আরেকবার প্রমাণিত হল।’’

দ্বিপু ইসানি লিখেছেন, ‘‘এতদিন চিল্লাইয়া শেষ পাবলিক, রেকর্ড গুলো এডিট করা, আজ ত ওনিই স্বীকার করলো, যে রেকর্ড সব ওনার, আবার রেকর্ড ফাঁসের জন্য নাকি মামলা ও করবে, যার জন্য পাবলিক চিল্লাইয়া গলার ১২ টা বাজাইছে তারা কই?’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর..

ফেসবুকে আমরা

Facebook Pagelike Widget