আজ ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২রা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

রমজানের প্রস্তুতি : মুমিনের পথ ও পাথেয়

মুফতী তারেকুজ্জামান

রমজান অন্য সব সাধারণ মাসের মতোই একটি মাসের নাম। কিন্তু ফজিলত, বরকত ও রহমতের কারণে এর রয়েছে অনন্য মর্যাদা। বাকি এগারো মাসের তুলনায় এ মাসটি তেমনই উজ্জ্বল ও মহিমাময়, আকাশের নক্ষত্ররাজির মাঝে সূর্য যেমন দীপ্তময়। এমন মর্যাদা ও ফজিলতের মহান মাস আমাদের সামনে উপস্থিত। আর কিছুদিনের মধ্যেই মাসটি সৌভাগ্য ও আখিরাতের অবর্ণনীয় অফার নিয়ে আমাদের মাঝে আগমন করবে। যে মাস হলো কুরআন অবতরণের, তাকওয়া অর্জনের ও রহমত বর্ষণের।

প্রতি বছর একবারের জন্য আসে এ মাসটি। তাই আমাদের হায়াত যেই ক’বছর, রমজানও পাই সেই ক’টা। এর মাধ্যমেই আমাদের আখিরাতের পুঁজি অর্জন করে নিতে হবে, পূর্ণ করতে হবে আমাদের পূণ্যের শূন্য ডালাগুলো। সময় স্বল্প, পুঁজির প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। তাই মাসটিকে খুবই সতর্কতা ও সচেতনতার সহিত কাটানোর চেষ্টা করতে হবে। উদাসীনতাবশত এ মহান মাসটি যেন হেলায়-খেলায় কেটে না যায়, সেজন্য আমাদের কিছু কর্মসূচি তৈরি করে মাসটিকে সেভাবে কাটানো উচিত।

রমজান মাস কীভাবে কাটাব, তার জন্য বিভিন্নজনের বিভিন্ন পরিকল্পনা থাকে। কেউ পুরো রমজান নফল ইবাদতেই কাটিয়ে দেন, কেউ কুরআনের প্রতি অধিক জোর দেন, কেউ সাদাকার পরিমাণ বাড়িয়ে দেন। মোটকথা, প্রত্যেকেই তার সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন, সুন্দর একটি রমজান কাটানোর। সুন্দর একটি রমজান কাটানোর জন্য আমরা বাছাই করে কিছু আমল ও ইবাদাতের লিস্ট তৈরি করেছি। এতে আমাদের জন্য রমজানের ফজিলত ও বরকত ভালোভাবে অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

১. প্রতিদিন ন্যূনতম দুই ঘণ্টা কুরআন তিলাওয়াত করবে। এটা এক বৈঠকে একসাথেও হতে পারে, কিংবা আলাদা আলাদা বৈঠকে ভিন্ন ভিন্ন সময়েও হতে পারে। তিলাওয়াত অবশ্যই সুন্দরভাবে তাজবিদের সহিত পড়া উচিত, তাড়াহুড়ো কাম্য নয়। আর আলিম হলে অবশ্যই অর্থ বুঝে বুঝে পড়বে। অনেকে শুধু খতমের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য মাখরাজ, তাজবিদ ইত্যাদির পরোয়া না করে খুব দ্রুত তিলাওয়াত করে। কিন্তু এটা উচিত নয়। উত্তম হলো, ধীরস্থিরভাবে অর্থ বুঝেশুনে পড়া; যদিও এতে খতমের সংখ্যা কম হোক।

২. প্রতিদিন এক ঘণ্টা আলাদাভাবে কুরআন তরজমা ও তাফসির অধ্যয়ন করবে। চাই তা বাংলা থেকে হোক কিংবা উর্দু থেকে বা আরবি থেকে। তরজমা ও তাফসির বাছাইয়ের জন্য অবশ্যই নির্ভরযোগ্য কোনো আলিমের সাথে পরামর্শ করে নেওয়া উচিত। নিজে নিজে বাছাই করতে গেলে বিভ্রান্তির আশঙ্কা আছে। এক্ষেত্রে জেনারেল ভাইদের জন্য তাফসিরে মাআরিফুল কুরআন বা তাওজিহুল কুরআন তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে সহজ হবে। সময় ও আগ্রহ থাকলে তাফসিরে ইবনে কাসিরও দেখা যেতে পারে।

৩. পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাআতের সহিত পড়ার ইহতিমাম করবে। তবে ফজরের জামাআতের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা, সুবহে সাদিকের শেষ সময় নিয়ে বেশ মতানৈক্য আছে। সাহরির প্রচলিত শেষ সময় থেকে কমপক্ষে বিশ মিনিট পর জামাআত হলে সেটাই নিরাপদ। এর আগে হলে সেটা সুবহে কাজিব হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই এক্ষেত্রে সতর্কতা কাম্য। সাহরি খাওয়া প্রচলিত শেষ সময়ের মধ্যেই শেষ করলে আর এর বিশ-পঁচিশ মিনিট পর সালাত আদায় করলে সিয়াম ও সালাত দুটিই নিরাপদ থাকে।

৪. তারাবিহর সালাত হলো সুন্নাতে মুআক্কাদা আইন। আর জামাআতে পড়া সুন্নাতে মুআক্কাদা কিফায়া। তারাবিহ নিয়মিত ত্রিশদিনই মসজিদে গিয়ে আদায় করা উচিত। তবে দু’ক্ষেত্রে মসজিদে যাওয়া ঠিক হবে না। এক : যেখানে অত্যধিক দ্রুত সালাত আদায় করা হয়। দুই : যেখানে বিনিময় নিয়ে খতম তারাবিহ পড়ানো হয়। এ দুই ক্ষেত্রে ইশার ফরজ সালাত মসজিদে পড়লেও তারাবিহ মসজিদে না পড়ে বাড়িতেই কিছু মানুষকে নিয়ে জামাআতের সহিত আদায় করবে। কাউকে না পেলে তবুও একাকি পড়াই ভালো।

৫. সম্ভব হলে রমজানে কিয়ামুল লাইল, জিকির-আজকার, তিলাওয়াত, দ্বীনি কিতাব অধ্যয়ন ইত্যাদির মাধ্যমে রাত্রি জাগরণ করবে। নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়া এবং এটাকে ধীরে ধীরে এমন অভ্যাসে পরিণত করা উচিত, যাতে সারা বছরই তা নিয়মিত পড়ার তাওফিক হয়। পাশাপাশি অধিকহারে আল্লাহর নিকটে ইসতিগফার ও কান্নাকাটি করবে। যেকোনো আমলের অভ্যাস তৈরি করার জন্য রমজানই সবচেয়ে উত্তম সময়। তাই তাহাজ্জুদসহ অন্যান্য ভালো আমলের অভ্যাস এ মাস থেকেই তৈরি করে নেওয়া উচিত।

৬. কম ঘুমানোর চেষ্টা করবে। কারণ, এটা দুনিয়ার জীবনে মুমিনের জন্য সবচেয়ে বড় অফারের মাস। আমরা দুনিয়ার জীবনে সাধারণত কোনো বড় অফার পেলে তা অর্জনের জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকি। শত কষ্ট হলেও সেটা পাওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করি। অথচ রমজান হলো মুমিনের জীবনে আখিরাতের সবচেয়ে বড় অফারের মাস। যত বেশি ঘুম হবে অফার গ্রহণ থেকে তত বেশি বঞ্চিত হতে হবে। তাই যথাসম্ভব ঘুম কমিয়ে সময় সেভ করে যত সাওয়াব ও ফজিলত অর্জন করে নেওয়া যায়, ততই লাভ।

৭. প্রতিদিন ন্যূনতম একজনকে ইফতার খাওয়ানোর চেষ্টা করবে; সামান্য পানি বা খেজুর দিয়ে হলেও। বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে এনেও খাওয়ানো যায়, প্যাকেটে বা পাত্রে করে বাসায়ও পাঠিয়ে দেওয়া যায়। অসহায়, গরিব, মুসাফির, আলিম, আত্মীয়স্বজন ও পড়শীদের মধ্য থেকে যে কাউকেই বেছে নেওয়া যেতে পারে। তবে মুত্তাকি ও দ্বীনদারদের প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করবে। আর দ্বীনদার ও মুত্তাকি আলিম হলে তো আরও বেশি উত্তম। তবে সামর্থ্য একটু ভালো হলে সব শ্রেণির লোককেই খাওয়াবে।

৮. রমজানে বাড়ির মা-বোন-স্ত্রীদের রান্নার ব্যস্ততা অনেক বেশি থাকে। তাই সময় করে রান্নাঘরেও কিছু কিছু সময় ব্যয় করবে। এটা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি সুন্নাত, যা কেবল রমজানের জন্যই নির্ধারিত নয়। তাই সারা বছরে না পারলেও রমজানে এটা নিয়ে একটু ফিকির করা যেতে পারে। সাহরির সময় ঘুম থেকে আগে আগে উঠে বাড়ির লোকদের ও পড়শীদের জাগিয়ে দেবে। এরপর নিজেও রান্নার কাজে মা-বোন-স্ত্রীদের সাধ্যমতো সহযোগিতা করার চেষ্টা করবে।

৯. এ মাসে সবর ও ইসারের গুণে গুণান্বিত হওয়ার চেষ্টা করবে। অযাচিতভাবে কাউকে গালিগালাজ বা কারও সমালোচনা করবে না। হিংসা-বিদ্বেষ ও হানাহানি থেকে পুরোপুরি দূরে থাকবে। সবার প্রতি, বিশেষত নিজের অধীনস্ত চাকর-কর্মচারী, ছাত্র-ছাত্রী, সন্তান-সন্তুতিসহ সব ধরনের লোকদের প্রতি সদয় হবে। রাগ হজমের চেষ্টা করবে এবং ব্যাপকভাবে ক্ষমা করে দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলবে। আর এসব সৎ গুণ এমনভাবে অর্জন করার চেষ্টা করবে, যাতে তা সারা বছর; বরং সারা জীবনের জন্য যথেষ্ট হয়ে যায়।

১০. সব ধরনের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করবে। যারা শিরক-বিদআতে লিপ্ত ছিল, তারা সঠিক বিষয়টি জেনে এসব থেকে সারাজীবনের জন্য তাওবা করে নেবে। যারা কবিরা গুনাহে অভ্যস্ত ছিল, তারা চিরজীবনের জন্য কবিরা গুনাহ ছেড়ে দেবে। আর যারা সগিরা গুনাহে অভ্যস্ত ছিল, তারা আজীবনের জন্য সগিরা গুনাহ ছেড়ে দেবে। আর যারা সব ধরনের গুনাহ থেকে দূরে ছিল, তারা নফল-মুসতাহাব-সুন্নাত ইত্যাদি আমলের প্রতি আরও যত্নবান হবে। এভাবে সবাইকে একটি স্তরে হলেও উন্নতি করার চেষ্টা করতে হবে।

১১. রমজানের শেষ দশকে নিজ এলাকার মসজিদে ইতিকাফে বসবে। শাইখ, মুরশিদ, উসতাদ—এমন বিভিন্ন স্তরের মানুষের সাথে ইতিকাফে বসার অজুহাতে নিজ এলাকা ছেড়ে দূরে কোথাও সফর করা উচিত নয়। তবে ভিন্ন কোনো কারণে কেউ তাদের সাথে আগে থেকেই অবস্থান করলে সেক্ষেত্রে তাঁদের সাথে ইতিকাফে বসতে কোনো সমস্যা নেই। নিজের এলাকার হক আগে মেটাবে, তারপর অন্য জায়গার ফিকির করবে। ইতিকাফে বসার জন্য কারও থেকে কখনো কোনো ধরনের বিনিময় গ্রহণ করবে না।

১২. রমজানে দান-সদকা বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে। অন্য মাসে এক হাজার টাকা দান করার অভ্যাস থাকলে এ মাসে দুই হাজার বা ততোধিক পরিমাণ দান করার চেষ্টা করবে। তালিবুল ইলমদের খোঁজখবর নিয়ে তাদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করবে। তাতব্য-তালাশ করে গরিব আলিমদের প্রতি অধিক খেয়াল রাখবে; বিশেষত যারা কারও কাছে হাত পাতে না, কারও কাছে সাহায্য চাইতে লজ্জাবোধ করে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এদের পরিবারগুলোর দেখাশোনা করা অনেক বিনিময়ের কারণ হবে, ইনশাআল্লাহ।

১৩. সাদাকাতুল ফিতর আদায়ে কার্পণ্যতার পরিচয় দেওয়া যাবে না। আধা সা গমের হাদিসের ভিত্তিতে জনপ্রতি ৫০-৬০ টাকা ফিতরা আদায় করা ব্যাপকভাবে সবার জন্য উচিত নয়। বরং সামর্থ্য থাকলে অধিক দামি নিসাবের ফিতরা আদায় করার চেষ্টা করবে। আধা সা গম তো সর্বনিম্ন মূল্যের ফিতরা। ধনী বা সামর্থ্যবান হলে আধা সা গমের পরিবর্তে এক সা খেজুর, কিসমিস বা পনিরের দামে ফিতরা আদায় করার চেষ্টা করবে। এক সা’ এর পরিমাণ বর্তমান পরিমাপে প্রায় সাড়ে তিন কেজির মতো হয়।

১৪. রমজানে জাকাতের টাকা আদায় করলে বেশি ভালো। নিসাব পরিমাণ অর্থ থাকলে এ মাসেই জাকাত হিসাব করে আদায় করা যেতে পারে। বছর শেষ হওয়ার আগেও জাকাত দেওয়া যায়। তাই নিসাব পরিমাণ সম্পদের ওপর এক চান্দ্র বছর অতিক্রান্ত না হলেও রমজান মাসে অগ্রীম বছরের জাকাত দিয়ে দিলে লাভ বেশি। এতে সওয়াব অনেকগুণে বেশি হয়। জাকাত ভালোভাবে বুঝেশুনে উপযুক্ত খাতে ব্যয় করা জরুরি। নিজের মনমতো যেকোনো জায়গায় চোখ বন্ধ করে জাকাত দেওয়া উচিত নয়।

১৫. অনলাইন ও গুনাহের উপকরণগুলো থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবে। অনলাইন মাধ্যমগুলো একান্ত দ্বীনি প্রয়োজনে ব্যবহার করলেও সময় নির্দিষ্ট করে সীমিত সময়ের জন্য ব্যবহার করবে। সবসময় এতে এক্টিভ থাকলে এবং অন্যান্য সময়ের মতোই এতে সময় ব্যয় করলে ইবাদতের মজা পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়বে। এমনিতেও অনলাইন-মাধ্যমগুলো বর্তমানে গুনাহ ও সমালোচনার আখড়াকেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই অন্যান্য সময়ে তো বটেই, রমজানে এসব ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্ক থাকার চেষ্টা করবে।

১৬. কোনো গুনাহের অভ্যাস থাকলে এ মাসেই তা থেকে স্থায়ীভাবে তাওবা করে নেবে। আজীবনের জন্য এসব ছেড়ে দেওয়ার সংকল্প করবে। যেমন : মুভি-নাটক দেখা, পর্নো দেখা, গেম-খেলায় আসক্ত থাকা, অবৈধ প্রেম-ভালোবাসা করা, অনলাইনের নানা ফিতনায় আক্রান্ত হওয়া, কুদৃষ্টির অভ্যাস থাকা ইত্যাদি। কেননা, এ মাসে শয়তান বন্দী থাকে। তাই খুব শক্তভাবে সুদৃঢ় নিয়ত করে গুনাহ ছেড়ে লাগাতার একমাস আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করলে আশা করা যায়, আল্লাহ তা থেকে স্থায়ীভাবে মুক্তি দিয়ে দেবেন।

১৭. অন্যান্য কাজ থেকে অবসর হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় দ্বীনি বইপুস্তক পড়বে। বই পড়ে ও আলিমদের বিভিন্ন হালকায় গিয়ে ইলম অর্জন করবে। সুন্নাহসম্মত দুআ-আজকার মুখস্থ করবে। বাড়ির লোকদের নিয়ে কিছু সময় দ্বীনি কথাবার্তা বলবে। কুরআন ভালো জানা থাকলে বাড়ির লোকদের কুরআন শিক্ষা দেবে। এককথায় বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানে পুরোপুরি দ্বীনি পরিবেশ কায়েম করে ফেলবে। গিবত, সমালোচনা, বিদ্বেষ থেকে নিজেও দূরে থাকবে, অন্যদেরকেও এ থেকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবে।

১৮. যারা কুরআন হিফজ করতে চায়, তাদের জন্য এ মাসটি সবচেয়ে সেরা। এমনিতেই এটা কুরআর অবতীর্ণ হওয়ার মাস, তদপুরি এ মাসে শয়তান বন্দী থাকে, গুনাহের পরিমাণ অনেক কমে আসে। এ মাসে মেধা ও চিন্তাচেতনাও থাকে ঝকঝকে ও পরিচ্ছন্ন, পাশাপাশি আল্লাহর রহমত ও বরকতের বারিধারা তো আছেই। তাই প্রতিদিন কিছু কিছু করে কুরআন হিফজ করলে এক সময় পুরো কুরআনই হিফজ হয়ে যাবে। এ কাজে কোনো সঙ্গী পেলে আরও বেশি ভালো। সেক্ষেত্রে হিফজটা আরও শক্তিশালী হবে।

১৯. শবে কদর পাওয়ার উদ্দেশ্য রমজানের শেষ দশকের প্রতিটি রাতই পুরোপুরি গুরুত্ব দিয়ে ইবাদত করবে; বিশেষ করে বেজোড় রাতগুলোতে। শুধু সাতাশ তারিখের অপেক্ষায় থেকে অন্যান্য রাতে গাফলতি করবে না। কেননা, শবে কদর শেষ দশদিনের যেকোনো রাতেই হতে পারে। যে রাত হাজার মাসের চাইতেও দামী, এমন মহান রাত পাওয়ার জন্য একমাস জাগতে হলে সেটাও তো কম হয়ে যায়। তাই এর জন্য দশ রাত জাগাকে কঠিন না ভেবে এসব রাতে ইবাদতের পূর্ণ স্বাদ পাওয়ার চেষ্টা করবে।

২০. রমজান শেষে বেশিরভাগ মানুষই ইদের কেনাকাটার জন্য মার্কেটে যায়। সেসময় দুটি জিনিসের বড় অভার পরিলক্ষিত হয়। এক : দৃষ্টির হিফাজত। দুই : ব্যাপক অপচয়। নারীদের ভীড়ে খুব কম মানুষই দৃষ্টির হিফাজত করতে পারে। আর অপচয়, সে তো এখন ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। একেকজনের জন্য তিন-চার-পাঁচ সেট করে জামা কেনা হয়; অথচ পাশের বাড়ির গরিব পরিবারটর ভালো খাবার পর্যন্ত খেতে পারে না। রমজানের মতো পবিত্র মাসে আমাদের এসব ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকা দরকার।

আমরা আমাদের জানামতে ভালো কাজের কিছু লিস্ট ও দিকনির্দেশনা তৈরি করেছি। এগুলো কেবল রমজানকে ভালোভাবে কাটানোর একটি পদ্ধতি মাত্র। কেউ চাইলে এতে আরও অনেক কিছু কমবেশও করে নিতে পারে। মোটকথা, রমজানটা সবার ভালো কাটুক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। সুন্দর একটি রমজান কাটানো সত্যিই বড় সৌভাগ্যের বিষয়! আল্লাহ তাআলা আমাদের রমজান মাসের আজমত ও পবিত্রতা অক্ষুণ্ণ রেখে আখিরাতের চিরস্থায়ী আ্যকাউন্ট ভারী ও সমৃদ্ধ করার তাওফিক দান করুন।

ঢাকার কণ্ঠ /এম এইচ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর..

ফেসবুকে আমরা

Facebook Pagelike Widget