হেফাজতে ইসলামকে অরাজনৈতিক সংগঠন দাবি কেন্দ্রীয় আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, বিগত ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করা হেফাজতের প্রায় ১১ বছরে কেউ প্রমাণ দিতে পারবে না- কোনো পার্টির সঙ্গে হেফাজতের সম্পর্ক ছিল।
সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে হেফাজত আমিরের ব্যক্তিগত সহকারী মাওলানা ইন’আমুল হাসান ফারুকীর প্রেরিত ২০ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও বার্তায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ভিডিও বার্তায় হেফাজত আমির আল্লামা বাবুনগরী বলেন, হেফাজত শান্তি-শৃঙ্খলা চায়। কাউকে ক্ষমতায় বসানো বা কাউকে ক্ষমতা থেকে নামানো হেফাজতের উদ্দেশ্য নয়। কোনো পার্টি বা দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন হেফাজত ইসলামের উদ্দেশ্য নয়। হেফাজতের উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর জমিনে হযরত মুহাম্মদ (স:) এর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা। এই হল হেফাজতের অবস্থান।
তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর বিরোধী হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না বলে দাবি করে হেফাজত আমির ভিডিও বার্তায় আরও বলেন, এমনি কিছু কিছু বক্তা তাদের বক্তব্যে এ ব্যাপারে বললেও কিন্তু মোদি আসার ব্যাপারে হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না। অথচ মোদির সফর ইস্যুকে কেন্দ্র করে গত ২৬ মার্চ জুমার দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছু দুর্ঘটনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২৬ মার্চ হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না। আমাদের কোনো কমান্ড ছিল না। আমি নিজে হাটহাজারী মাদ্রাসায় ছিলাম না, দূরে সফরে ছিলাম। এর আগে ঢাকার বায়তুল মোকাররমে কিছু মুসল্লি এবং ক্যাডারের মাঝখানে কিছু অঘটন ঘটেছে। বায়তুল মোকাররম মসজিদের ভিতরে ক্যাডাররা মুসল্লিদেরকে মারধর করেছে। এর পরে হাটহাজারীর ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য আমরা দুঃখিত। আবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ও এমন ঘটনা ঘটেছে বলে হেফাজত আমির দাবি করেন।
আমাদের দেশের অবস্থা একটু ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে এমনটা মন্তব্য করে জুনায়েদ বাবুনগরী ভিডিও বার্তায় আরও বলেন, মাহে রমজানে প্রশাসন বেধড়কভাবে আমাদের হেফাজত ইসলামের নেতাকর্মী, হক্কানি আলেম ওলামাদের, দেশের জনগণকে, ছাত্র ও তৌহিদী জনতাকে হয়রানি ও গ্রেফতার করছে। অবিলম্বে এ ধরপাকড় ও হয়রানি বন্ধ এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। তাছাড়া আমাদের হেফাজত নেতৃবৃন্দ ছাড়াও নেতৃবৃন্দ ও আলেম-ওলামাসহ ছাত্র ও তৌহিদী জনতা যাদেরকে ইতোমধ্যে আটক করা হয়েছে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
বিগত ২০১৩ সালের সাজানো মামলাগুলো ডাহা মিথ্যা মামলা দাবি করে হেফাজত আমির বলেন, প্রশাসন এতদিন কোথায় ছিল? প্রায় ৭/৮ বছর পর ২০১৩ সালের মামলায় অনেক হেফাজত নেতা, আলেম-উলামা ও ছাত্র তৌহিদী জনতাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে তাদেরও নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। ইসলাম সন্ত্রাসের ধর্ম নয়, শান্তির ধর্ম। নৈরাজ্য, অশান্তি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ আমরা চায় না।
প্রিয় দেশবাসী, ছাত্র-জনতা ও আলেম-ওলামা এবং হেফাজত নেতৃবৃন্দের প্রতি পরামর্শ দিতে গিয়ে হেফাজত আমির বলেন, আপনারা ধৈর্য ধরুন এবং সবর করুন। কোনো সংঘাতে যাবেন না। ভাংচুর, জ্বালাও-পোড়াও করবেন না। ইসলাম কখনো জ্বালাও-পোড়াও বিশ্বাস করে না; বরং এগুলোকে হারাম মনে করে।
ভিডিও বার্তায় তিনি সরকার ও জনগণের উদ্দেশ্যে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, আলেম-ওলামারা শান্তিপ্রিয়, তারা শান্তি চাই। তারা দেশকে ভালোবাসে এবং জাতিকে মহব্বত করে। দেশের শান্তি কামনা করে এ রমজান মাসে সকল প্রকার বালা মসিবত ও আপদ-বিপদ দূর হওয়ার জন্য সবসময় আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন। এটা আপনাদের প্রতি আমার নসিহত।
Leave a Reply