আজ ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২রা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

রেকর্ড তাপমাত্রায় পুড়ছে দেশ, ৭ বছরের সর্বোচ্চ

তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে সারা দেশ। রোজার সঙ্গে তীব্র গরম যুক্ত হয়ে জনজীবনে ভোগান্তি চরমে উঠেছে। গতকাল রবিবার (২৫ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রিতে, যা রেকর্ড হয়েছে যশোরে। এটি গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অন্তত পাঁচ জায়গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির ওপরে উঠেছে। তীব্র গরমে ওইসব এলাকার জনজীবন হাঁসফাঁস করছে।

বাদ নেই রাজধানীও। গতকাল রাজধানীতে গত সাত বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে। এ দিন রাজধানীর তাপমাত্রা ছিল ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মাঝারি মাত্রার তাপপ্রবাহে শহরবাসীর অবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এই তাপপ্রবাহ আরো তিন-চার দিন অব্যাহত থাকতে পারে। ৩০ এপ্রিলের পর বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কমবে।

অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, চলমান তাপপ্রবাহ আগামী তিন-চার দিন অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ৩০ এপ্রিল বা তার পরদিন থেকে প্রায় সারা দেশেই বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তখন প্রায় সপ্তাহজুড়েই বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির হলে তাপমাত্রা অনেকটাই কমে আসবে। এ ছাড়া গত তিন-চার দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে রাজশাহী ও খুলনা অঞ্চলে কিছুটা বাড়তে পারে। সেটা সর্বোচ্চ এক ডিগ্রি পর্যন্ত।

অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গতকালের আগে সর্বশেষ ২০১৪ সালের ঠিক এই দিনে অর্থাৎ ২৫ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় এরচেয়ে বেশি ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। তারপর থেকে গতকালেরটাই সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। এ ছাড়া দেশের ইতিহাসে এযাবৎ সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হচ্ছে ৪৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা ১৯৭২ সালের ১৮ মে তারিখে রাজশাহীতে রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীতেও গত সাত বছরের বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে।

অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গতকাল রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০১৪ সালে রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৯ ডিগ্রিতে। গতকাল তার চাইতেও বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। তবে গতকালের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা সর্বশেষ কবে রেকর্ড হয়েছে সেই তথ্য তাৎক্ষণিক জানাতে পারেনি অধিদপ্তরের দায়িত্বরত কর্মকর্তা। তবে ঢাকায় ইতিহাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা ১৯৬০ সালের ৩০ এপ্রিল রেকর্ড হয়।

অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া এবং খুলনা অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশসহ ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রংপুর, সিলেট ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

সোমবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। রাতের তাপমাত্রা থাকবে অপরিবর্তিত। অন্যদিকে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সোম ও মঙ্গলবার আবহাওয়ার অবস্থা সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।

আগামী পাঁচ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে এই সময়ের শুরুতে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, লঘুচাপের বাড়তি অংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে।

ঢাকায় সোমবার সূর্যোদয় ভোর ৫টা ২৮ মিনিটে এবং সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর..

ফেসবুকে আমরা

Facebook Pagelike Widget