আজিজুর রহমান রাজু। কক্সবাজার
দেখতে দেখতে ৮টি বছর চলে গেল। আমার আক্তার হোসেন বাড়ি আসে না। গ্রামের কত মানুষের ছেলে আসে আর যায় ,আমার আক্তার আসে না।
ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলেন ৬৫ বছরের বৃদ্ধা খালেদা খাতুন। আক্তার হোসেন কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ গজালিয়া এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে । ২০১৩ সালের ৪ই নভেম্বর বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফুটাতে এক বুক সপ্ন নিয়ে গভীর সাগর পথে মালেশিয়ার উদ্যেশ্যে পাডি জমান ।
তার সপ্ন যে এভাবে সমাধিস্থ হবে তার জানা ছিলনা তার । বাড়িতে থেকে বের হওয়ার পর থেকে আজ ২৮ নভেম্বর প্রায় ৮ বছর পার হয়ে গেলেও সন্ধান মেলেনি আক্তারের।
কিন্তু পিতা আবুল হোসেন,মাতা খালেদা খাতুন এখনো ছেলের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে ।
খালেদা খাতুন লোকমুখে শুনেছেন, মানব পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ে যারা সগর পথে ট্রলার নিয়ে মালেশিয়া যাচ্ছিলেন এমন অনেক ট্রলার সাগরে শতশত যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়,। অনেকে বলেন আক্তারও একই ভাবে সাগরে ট্রলার ডুবির দূর্ঘটনায় মারা গেছে। খালেদা খাতুন বলেন আমার ছেলে কখনো মারা যেতে পারে না ,আমার আমার ছেলে জীবিত আছে, আমার আক্তার এখনো বেঁচে আছে একদিন আমার কাছে ফিরবে ।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ার জেলে বন্দি থাকা বাংলাদেশী কিছু নাগরিক ইউএনএইচসিআরের মাধ্যমে তারা শিগগিরই জামিন পেতে পারে বলে জানিয়েছেন আরাকান ন্যাশনাল ডেমোক্রেসি পার্টি (এএনডিপি)।
১০ নভেম্বর সংগঠনটির টুইটারে এক টুইট বার্তায় কারাগারে বন্দীদের রোহিঙ্গা হিসেবে অবহিত করলেও ভাইরাল হওয়া ছবিতে কক্সবাজার চৌফলন্ডির ২জন ও ঈদগাঁও উপজেলা ইসলামাবাদের গজালিয়া আক্তার হোসেনকে শনাক্ত করা গেছে বলে পরিবারও স্বজনরা নিশ্চিত করেছেন৷
এরই মধ্যে পথে বসে বসে কান্নাকাটি করে মা বললেন, আজ ৮ বছর হচ্ছে ছেলেটা আমার চলে গেছে। আমার বাবুটি আর বাড়িতে আসে না। ছেলেকে দুঃখ–কষ্ট করে লালন পালন করছিলাম। সেই ছেলেব এই ভাবে চলে গেছে। আমার ছেলে আর আসে না। ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখি, , আমারে ছেলে বলছে, মা তোমার শরীর খারাপ। এরপরই চেতন হয়ে যায় (ঘুম ভেঙে যায়) ঘুমের মধ্যে ছেলে কথা চিন্তা করে কতোবার জ্ঞান হারিয়েছি।
এই বিষয়ে ইসলামাবাদ চেয়ারম্যান নূর ছিদ্দীক জানান, আবুল হোসেন ছেলে আক্তারের দীর্ঘ বছর ধরে সন্ধান মেলেনি তবে টুইটারে খবরটি সম্পর্কে তিনি অবগত নন ।
এলাকার লোকজনের দাবি টুইটারে যে ছবি ভাইরাল হয়েছে তাতে আমরা আক্তারকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি।
মেম্বার সিরাজুল ইসলাম জানান, আক্তার একজন মেধাবী ছাত্র ছিল। কিন্তু কখন যে মানব পাচারকারী চক্রের খপ্পড়ে পড়ে যায় তা বুজতে পারিনি। আক্তার কি এখনো বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে তার কোন খবর নেই।
। আক্তারসহ মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী সকল জেলবন্দিদের ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী ।
Leave a Reply