ইউসুফ আ: এর দশ ভাই রাস্তা দিয়ে যাইতেছিলো। একজন বলতেছে এই রাস্তা দিয়ে আমাদের আগে একটা গাভী চলে গেছে। সাথে থাকা আরেকজন বলতেছে হ্যাঁ এটার একটা চোখ নাই। আরেক ভাই বলতেছে হ্যা এটা সাত আট মাসের গাভীন হবে।
ঠিক ঔ মহল্লাররই একটা গাভী চুরি হইছে, এক চোখ নাই আর সাত আট মাসের গাভীন। সেই লোক খুজতেছে গাভী। এখন দেখতেছে চোর বাড়ির কাছ দিয়ে যায়। গাভীর মালিক বলতেছে এই দাড়াও! তোমরা আমার গাভী চুরি করছো। তখন ইউসুফ আ: এর ভাইরা বলতেছে আমরা চোর না, আমরা নবীর সন্তান, আমরা চুরি করি নাই। গাভীর মালিক বলতেছে যে, যদি চুরি না কর তাহলে আমার গাভীর যে এক চোখ নাই তোমরা কেমনে জানলা ? আমার গাভী যে সাতা আট মাসের গাভীন এটা কেমনে বললা ? এই রাস্তা দিয়ে গাভী ই গেছে এইটা ক্যমনে কইলা, বলদও তো হইতে পারতো ? তারা বলল, আন্তাজ করে বলছি। বুদ্ধি খাটিয়ে বলছি। মালিক বলল, আমার সাথে মজা কর ? বুদ্ধি খাটিয়ে এরকম হুবহু বলা যায় ? চল বাদশার দরবারে। সেখানে বিচার হবে। বাদশার দরবারে যাওয়ার পর বাদশা বলল, তোমরা কি চুরি করছ ? তারা বলল, না না আমরা নবীর সন্তান। বাদশাহ বলল, ঠিক আছে। আমার বাড়িতে আসছো, আগে মেহমানদারি করি, তারপর না হয় বিচার হবে।
খাবার দেওয়ার পর একজন খাইতেছে আর বলতেছে যে, এই রুটি যে মহিলা বানাইছে তার মাসিক (ঋতুস্রাব) হইতেছে। বাদশা দুর থেকে শুনতেছে, বাদশা খবর নিয়ে দেখলো ঠিকই যেই বান্ধী রুটি বানাইছে তার মাসিক (ঋতুস্রাব) হইতেছে। বাদশা ভাবলো এই গাইবি খবর তারা জানল কেমনে ? আরেকজন বলতেছে, এই শুনছো ? এই দেশের যেই রাজা আছে না ? তার জন্মে দোষ আছে। (বাদশাও জানে তার জন্ম নিয়া এলাকায় কিছু কথা বার্তা আছে) নাস্তা শেষে বাদশা বলল, গরুর বিচার পরে হবে আগে এই গুলোর বিচার শেষ করি। আচ্ছা বল তো, রুটি যে বানায় তার যে মাসিক হইতেছে এটা তোমরা বললে কিভাবে ? তারা বলল: রুটির চতুর্দিকে ঠিকমত সিদ্ধ হইছে কিন্তু মাঝখানে কাচা এর দ্বারা বুঝতে পারলাম, যে মহিলা রুটি বানায় তার কোন না কোন সমস্যা আছে, না হয় রুটি এমন হওয়ার কথা না। যেহুতু মহিলাদের মাসিক একটা সমস্যা আছে তাই ধারনা করছি তার মাসিক হইতেছে। বাদশা বলল: আচ্ছা তোমাদের আন্তাজ তো মারাত্মক! আচ্ছা বাদশার যে জন্মের দোষ এটা কেমনে বুঝছো ? তারা বলল: প্রত্যেক মেজবানের (বাড়ির মালিক) করণীয় মেহমানের (অতিথি) সাথে খানা খাওয়া। যেহুতো বাদশাহ আমাদের খানা দিয়ে দুরে বসে আছে এর দ্বারা বুঝলাম, বাদশার জন্মে সমস্যা আছে নায় হয় এমন করতো না। কেননা, প্রত্যেক নবী মেহমানের সাথে খানা খেয়েছেন। এর এটা সুন্নাত।
বাদশা এবার বলল, এই রাস্তা দিয়ে যে গাভী গেছে সেটা বুজলা কেমনে ? তারা বলল: বলদ যদি ঘাস খায় তাহলে ঘাসের গোড়া থেকে খায়, আর গাভী যদি খায় তাহলে আগা আগা খেয়ে চলে যায়, যেতেহু ঘাসের আগা খাওয়া সেহেতু বুঝলাম এই রাস্তা দিয়ে গাভীই গেছে। আচ্ছা, গাভীটার যে এক চোখ নাই এইটা কেমনে বুঝলা ? তারা বলল: রাস্তার দুই পাশেই ঘাস আছে কিন্তু এক পাশ দিয়ে খেয়ে গেছে আরেক পাশে খায় নি এতে বুঝলাম এক পাশ দেখছে অন্য পাশ দেখেনি, তার মানে গাভীটার এক চোখ নাই। আচ্ছা…. তবে এটা যে সাত আট মাসের গাভীন সেটা কেমনে বুঝলা ? তারা বলল: গরুটা হেটে গেছে কিন্তু তার চার পায়ের মধ্যে পিছনে দুই পা মাটিতে বেশী ঢাপছে এতে বুঝলাম যে, গরুটা সাত আট মাসের গাভীন। পেটে বাচ্চা থাকার কারনে পিছনের দুই পা বেশী ঢাপছে। বাদশা তাদের বুদ্ধির কাছে হার মানলেন অতপর তারা নির্দোষ প্রমানিত হলো।
উল্লেখ যে: তারা ইউসুফ আ: এর জামায় বকরীর রক্ত লাগিয়ে তাদের পিতার নিকট এনে বলল যে, ইউসুফকে নেকড়ে খেয়ে ফেলেছে। ইয়াকুব আ: জামাটি হাতে নিয়ে মনে মনে বললেন, কেমন নেকড়ে আমার ইউসুফকে খেয়েছে যে জামাটি একেবারে অক্ষত!! জামাটিতে নেকড়ের কোন আচরেরও দাগ লাগেনি!!!
শিক্ষানীয়: ইউসুফ আ: এর ভাইরা কত বুদ্ধিমান ছিল অথচ ইউসুফ আ: কে হত্যা করে জামায় রক্ত লাগিয়ে অক্ষত ভাবে এনেদিছে। অথচ নেকড়ে কাউকে খেলে জামা ছিড়ে তছনছ হয়ে যাওয়ার কথা।
এর দ্বারা বুঝা যায়। কোন মানুষকে যদি কেউ হত্যা করে বা কোন ক্ষতি করে তাহলে সে কোন না কোন ভুল করেই যায়। আল্লাহ তায়ালা তার দ্বারা কোন একটা ভুল করিয়ে দেয়। যার দ্বারা সে দোষি প্রমানিত হয়। যেন শাস্তির আওতায় আসে। তবে সঠিক ভাবে তদন্ত করলে, কোন দুর্নীতি না করলে সঠিক অপরাধীকে ধরা অবশ্যই সম্ভব।
Leave a Reply