আজ ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২রা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

হবিগঞ্জের জমিদার পরিবারের শেষ সম্বলটুকু ভিটে মাটি হারাতে বসেছে!

নাহিদ মিয়া, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সুরমার প্রখ্যাত জমিদার স্বরোজ বিকাশ চৌধুরীর বাড়িটি এখন বেহাত হওয়ার পথে। সবকিছু হারিয়ে ওই জমিদার পরিবার শেষ সম্বলটুকু ভিটে মাটি হারাতে বসেছে। বাড়িতে গিয়ে প্রতিপক্ষের কথিত চুরির মামলায় জমিদার পুত্রবধু উষা রানি চৌধুরী বৃদ্ধ বয়সে জেলের ঘানি পযর্ন্ত টানতে হয়েছে। এখন বাড়ির সবকিছু হারিয়ে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে একটি ছোট ঘরে বসবাস করছেন। বাগানের একটি চাকুরি ছিল তাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন। এখন এই চাকুরিটিও হাত ছাড়া হয়ে গেছে। তাই অভাব অনটনের মধ্যে এই জমিদার পরিবারের সদস্যরা নিদারুন কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। জমিদার পুত্র সুভাষ চৌধুরী জানান, তাদের অনেকগুলো জমিজমা ছিল। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে শত শত বিঘা জমি জবরদখল হয়ে গেছে। শেষ সম্বলটুকু ছিল বাবার স্মৃতি ভিটেবাড়ি। এরপরও এখন প্রভাবশালীদের দৃষ্টি পড়েছে। বাড়ির স্মৃতি ধরে রাখার জন্য তার প্রয়াত জমিদার স্বরোজ বিকাশ চৌধুরী নিজ উদ্যোগে মহানাম যজ্ঞ উৎসবের আয়োজন করেছিল। যুগ যুগান্তর পেরিয়ে এ উৎসব এখন ৫৫ বছরে চলছে। প্রতি বছর মাঘি পূর্ণিমায় সুরমা উৎসবে হাজার হাজার পূর্ণাথীদের আগমন ঘটে। এই উৎসবের পরিচালনার দায়িত্ব ছিল জমিদার পরিবারের লোকজন। কিন্তু গত বছর দশেক আগে একটি চক্র জমিদার পরিবারকে বাদ দিয়ে তাদের ভিটে মাটি ও জমিজমা জবর দখলের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ভাবে পরিবারকে হয়রানি করছে। বছর চারেক আগে জমিদার পুত্রবধু উষা রানি চৌধুরী বাড়িতে গিয়ে বসবাস করলে কথিত একটি মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে বৃদ্ধ বয়সে তাকে হাজত কাটতে হয়েছে। জমিদার পুত্রবধু উষা রানী চৌধুরী বলেন, জমিদারের শেষ সম্বলটুকু দখল করার জন্য উড়ে এসে জুড়ে বসা লোকজন নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। যাদেরকে আমরা দয়া পরবশ হয়ে জায়গা দিয়েছিলাম তারা এখন জমিদার বাড়ি গ্রাস করতে চাইছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে জেল কাটিয়েছে। জমিদারের সব সম্পদ হারিয়ে শেষ সম্বলটুকু এখন আমরা হারাতে বসেছি। বাড়িতে যেতে চাইলে আমাদের উপর মিথ্যা মামলা সহ নানা ধরনের ভয় ভীতি দেখানো হচ্ছে। এখন আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ৩শতক ভূমিতে ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছি। আমার একমাত্র ছেলের উপার্জন দিয়ে কোনরকম দিনযাপন করছি এবং অনেকটা আর্থিক সংকটে পরে অভাব অনটনের মধ্যে আমাদের সময় পার হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর..

ফেসবুকে আমরা

Facebook Pagelike Widget