পবিত্র ঈদুল ফিতর (১৪৪১হিজরী) উপলক্ষে প্রিয় দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা, ঈদ মুবারক।
হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুসারে পবিত্র রমজানের শেষে শাওয়ালের ১ তারিখে মুসলিম উম্মাহর আবেগের,আনন্দের পবিত্র ঈদুল ফিতর। এই দিনে আমি মহান আল্লাহর কাছে উম্মাহর অনাবিল সুখ,শান্তি, নিরাপত্বা, আনন্দ ও সমৃদ্ধি, এবং ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবনের কল্যাণ ও নাজাত কামনা করছি। দু’আ করছি, উম্মাহর প্রতিটি ঘরে প্রবাহিত হোক দিনী আমেজে শান্তির অমীয় ধারা।
করোনা কালের সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম এক পরিবেশে এবারের ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। আসুন, এই পবিত্র দিনকে উপলক্ষ করে ধর্মীয়, সামাজিক এবং মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশু, কিশোর এবং দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। ধনী-দরিদ্র, উঁচু-নিচু এবং সাদা-কালোর সব ভেদাভেদ ভুলে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আনন্দ ভাগাভাগি করি।
আসুন, এই মুবারক দিনে অতীতের সব কলহ- বিবাদ-বিসংবাদ, হিংসা-বিদ্বেষ, ভেদাভেদ ও মনোমালিন্য, এবং পুরনো সকল দুঃখ কষ্ট ও গ্লানি কাটিয়ে সকল মুসলমান এক কাতারে দাঁড়িয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করি। অতীতের সব গুনাহ থেকে তাওবা করি।নিবিড় ভ্রাতৃত্ববোধে উদ্বুদ্ধ হই। উম্মাহর মাঝে ছড়িয়ে দেই মানবতা,কল্যাণ, ইনসাফ, সাম্য, প্রীতি,শান্তি,ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্যের শিক্ষা।
ঈদের এ আনন্দে শরিক হওয়ার সামর্থ্য সবার সমান থাকে না। সে জন্য সমাজের ধনী ও বিত্তবানদের ওপর ইসলামের নির্দেশ রয়েছে দরিদ্র ও বিত্তহীনদের মধ্যে জাকাত ও ফিতরা প্রদানের। পবিত্র কুরআনে সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করা হয়েছে, বিত্তবানদের সম্পদের ওপর বিত্তহীনদের অধিকার রয়েছে।
দেখুন, জাকাত, সাদকাতুল ফিতর ও দান-খয়রাতের মাধ্যমে গরিবদের জীবন যাপনে কিছুটা হলেও গতি ফিরে আসে। বৈষম্য কিছুটা হলেও হ্রাস পায়। ধনী শ্রেণীর মানুষের পাশাপাশি গরিবরাও ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে। সহযোগিতার মানসিকতার বিস্তার ঘটে। সামাজিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পায়।
তাই আসুন, বিধান অনুযায়ী-ঈদুল ফিতরের নামাজের আগেই সাদকাতুল ফিতর (ফিতরা) আদায় করার সাধ্যমত চেষ্টা করি। সামর্থ্য ও সাধ্যানুযায়ী গরীব মানুষের প্রতি বাড়িয়ে দেই সাহায্য, সহযোগিতা এবং ভালবাসার হাত।
আসুন, ঈদুল ফিতরের দাবী ও চেতনা ধারণ করে অঙ্গীকার করি আমরা সব গুনাহের কাজ এবং সকল হিংসা, বিদ্বেষ ও হানাহানি থেকে মুক্ত থাকবো এবং ঐক্যবদ্ধ ও ভালোবাসাপূর্ণ সমাজ এবং দেশ গঠনের নিমিত্তে ইসলাম কায়েমের জন্য একযোগে কাজ করবো। পবিত্র ঈদকে অভিশাপে পরিণত করবো না । তাহলেই আমাদের ঈদ পূর্ণতা পাবে এবং আমরা উপভোগ করতে পারবো ঈদের প্রকৃত আনন্দ। মহান আল্লাহ সবাইকে কবুল করুন।
Leave a Reply