আজ ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বর্তমানে দেশে সর্বোচ্চ পরিমাণ চালের মজুত রয়েছে: খাদ্যমন্ত্রী

মেরাজ হোসেন, নওগাঁ

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বর্তমানে দেশে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ পরিমাণ চালের মজুত রয়েছে। তারপরেও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য চাল আমদানি বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বৈরি আবহাওয়ার কারণে দেশে আমন আবাদ কিছুটা ব্যাহত হতে পারে। শুধু দেশে নয়, সারা বিশ্বেই খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

মঙ্গলবার(৩০ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় নওগাঁ সার্কিট হাউস মিলনায়তনে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশে ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি এবং টিসিবির কার্ডধারীদের মধ্যে চাল ও আটা বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘চলতি বোরো সংগ্রহ অভিযানে গতকাল সোমবার পর্যন্ত ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৫৩১ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ হয়েছে। চালের এ মজুত এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। সংগ্রহ অভিযান আরও দুই দিন (আজ মঙ্গলবার ও আগামীকাল বুধবার) চলবে। এই দিনে লক্ষ্যমাত্রার বাকি ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ হয়ে যাবে। বাজারে কৃষকরা এবার ধানের দাম ভালো পাওয়ায় ধান সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার প্রায় অর্ধেক পূরণ হয়েছে। সরকারিভাবে ধান সংগ্রহের মূল লক্ষ্য হচ্ছে কৃষকরা, যাতে বাজারে ধানের ভালো দাম পায়। সেই লক্ষ্যও আমাদের পূর্ণ হয়েছে।’

তিনি বলেন, শুধু চাল মজুত নয় অন্যান্য খাদ্য মজুতের ক্ষেত্রেও ঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। গম মজুতের ক্ষেত্রে একটা সমস্যা ছিল, সেটাও কেটে গেছে। রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে ইতিমধ্যে গম আমদানির ব্যবস্থা হয়ে গেছে।

মানুষের কষ্ট লাগবের জন্য ওএমএসের ডিলার প্রায় তিনগুণ বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি আমাদের হিসাবের বাইরে হঠাৎ করে চালের দাম পাঁচ থেকে ছয় টাকা বেড়ে যায়। এতে মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। মানুষের এই কষ্ট লাগবের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশে একযোগে ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু থাকবে। আগে সারাদেশে ৮১৩টি ওএমএস কেন্দ্র চালু ছিল। এবার সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ২ হাজার ৩৬৩টি করা হয়েছে। আগে একজন ওএমএসের ডিলার এক টন চালের বরাদ্দ পেতেন। এখন প্রত্যেক ডিলার দুই মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পাবেন। এছাড়া সিটি শহরগুলোতে ট্রাক সেলে সাড়ে ৩ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পাবেন। ওএমএসের মাধ্যমে বিতরণ করা প্রতি কেজি চালের মূল্য হবে ৩০ টাকা। ওএমএস কেন্দ্রে টিসিবি কার্ডধারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। টিসিবি কার্ডধারীরা কার্ড দেখিয়ে এবং সাধারণ মানুষ জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে মাসে দুই বার ৫ কেজি করে চাল কিনতে পারবেন। এক ব্যক্তি যাতে বার বার চাল কিনতে না পারেন সেটা নিশ্চিত করা হবে।’

সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, খাদ্যবান্ধবের কর্মসূচির মাধ্যমে সারা দেশে ৫০ লাখ পরিবারের মাঝে চাল বিতরণ করা হবে। প্রতিটি পরিবার ১৫ টাকা কেজি দরে মাসে একবার ৩০ কেজি চাল কিনতে পারবে। লক্ষ্যমাত্রার ৫০ লাখ পরিবারের মধ্যে ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশ যাচাই-বাছাই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী মাসের মধ্যে বাকি ২০ শতাংশ পরিবারের যাচাই-বাছাই কাজ শেষ হবে। ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে সুবিধাভোগী প্রত্যেক পরিবারকে স্মার্ট কার্ড দেওয়া হবে। এর ফলে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতেও কেনো অনিয়মের সুযোগ থাকবে না।

চালের আমদানি শুল্ক কমানোর ফলে ইতিমধ্যে চালের দাম নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তেলের দাম কমানো, ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালুর ফলে কিছু দিনের মধ্যেই বাজারে চালের দাম সহনীয় মাত্রায় চলে আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর..

ফেসবুকে আমরা

Facebook Pagelike Widget