আজ ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১লা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

হাটবাজারে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিনের সয়লাব, হুমকির মুখে পরিবেশ!

সংবাদদাতা বাকেরগঞ্জ, বরিশাল

জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে পলিথিন বিক্রি। উপজেলার প্রায় প্রতিটি হাট-বাজারে ছোট বড় সব বাজারে, লোকালয়ের দোকানসহ অলিগলির প্রতিটি দোকানেই মিলছে অবৈধ ঘোষিত পরিবেশ দূষণকারী পলিথিন। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় ব্যবহার হচ্ছে নিষিদ্ধ এইচডিপিই (হাইয়ার ডেনসিটি পলি ইথালিন) পলিব্যাগ।

যার ব্যবহার মানুষের জীবনে মারাত্মক ক্ষতি করলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নীরব থাকায় এই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। পরিবেশ বিপর্যয়ের কারনে সরকারী ভাবে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও নিয়মের তোয়াক্কা না করে দেদারছে উপজেলার প্রায় সর্বত্রই বিক্রি হচ্ছে এসব ক্ষতিকর পলিথিন ব্যাগ। এর ফলে পরিবেশের মারাত্বক ক্ষতি সাধন হচ্ছে।

অপচনশীল এই পলিথিন যত্রতত্র ফেলার কারণে পানি মাটি ও বাতাস দূষিত হয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগ-ব্যাধিতে। এ ছাড়াও পানি চলাচলের নালা, নর্দমা, খালবিল যত্রতত্র ছড়িয়ে পড়ছে এতে পানি চলাচলে বাধাগ্রস্ত হয়ে জলজটের সৃষ্টি হচ্ছে। জমে থাকা পানিতে ব্যাকটেরিয়াসহ নানা রোগ জীবাণু ছড়াছে।

বাকেরগঞ্জ পৌর এলাকার বরিশাল কুয়াকাটা মহাসড়কের বাকেরগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড ব্রিজ সংলগ্ন খালে ও আগাবাকের লেনের প্রবেশ পথ সড়কের উপরে দীর্ঘদিন ধরে অপচনশীল এই পলিথিন বর্জ ময়লা-আবর্জনা ফেলে আসছে বাস স্ট্যান্ড কাঁচা বাজার, মাছ বাজার ফুটপাত দখল করে বসা ফল ব্যাবসায়িরা। পলিথিন বর্জ্যের স্তুপে পাহাড় সমান হয়ে গেছে। এতে পথচারী ও যানবাহনের যাত্রীদের উৎকট দুর্গন্ধ সহ্য করে ওই এলাকা পার হতে হয়।

আগাবাকের লেন পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের লোকজন ময়লা-আবর্জনার স্তুপের উপর দিয়েই হাটাচলা করেন।এছাড়াও পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের গ্রামীন ব্যাংক সংলগ্ন আবাসিক এলাকা, পৌর কাঁচা বাজারের ড্রেনের উপর বিআইপি কলোনিতে পলিথিন বর্জ্যের স্তুপে ছেয়ে গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ,গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের উপর ও আবাসিক এলাকায় দিনের পর দিন পলিথিন বর্জ্য ফেলা হলেও সংশ্লিষ্টরা তা সরাতে কোনও পদক্ষেপই নেয়নি।

পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জানান, পৌর কর্তৃপক্ষ ময়লার স্তূপের সামনে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছেন এখানে ময়লা ফালানোর সম্পূর্ণ নিষেধ। তাহলে পৌর কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করে ময়লা ফালাচ্ছে কে? আর সেই ময়লার স্তুপ অপসারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নীরব কেন? এমন পরিস্থিতিতে পৌর বাসি অসাহায় হয়ে পরেছে। এই সব প্লাস্টিক, পলিথিনসহ অপচনশীল বর্জ্য পদার্থ পানিকে দূষিত করাসহ জমির উর্বরতা শক্তি কমিয়ে দিচ্ছে।

একইসঙ্গে ঘটছে পৌর শহরের পরিবেশের বিপর্যয় দুষিত হচ্ছে পরিবেশ। ১৯৯০ সালে পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি একটি ক শ্রেণীর পৌরসভা হলেও চিত্র যেন ভিন্ন।পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ৩২ বছর পার হলেও নেই নির্দিষ্ট কোন ময়লা ফেলানোর স্থান। সরকারের পরিবেশ অধিদপ্তর বা স্থানিয় প্রশাসন উপজেলার পরিবেশ রক্ষায় কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

১৪ টি ইউনিয়নে ঘুরে দেখা গেছে, কোথায়ও বর্জ্য ফেলার ব্যবস্থা না থাকায় যে যেখানে পারছে বর্জ্য ফেলছে। বিভিন্ন হাট-বাজারে ছড়িয়ে আছে প্লাস্টিকের পানির বোতল, পলিথিন। এ সব অপচনশীল বর্জ্যে এলাকায় খাল ও ডোবা-নালায় ময়লা আবর্জনা ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে জমতে থাকা অপচনশীল এসব বর্জ্যের কারণে ভরাট হয়ে যাচ্ছে ছোট ছোট খাল। দূষিত হচ্ছে পানি।

বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীল বলেন, অবৈধ পলিথিন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমরা শীঘ্রই অভিযানে নামবো। একটি নিরাপদ, সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করতে যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলা বন্ধ করা হবে। সড়ক সহ পৌর আবাসিক এলাকায় ময়লা না ফেলানোর জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ জানান, আগাবাকের লেনের প্রবেশ পথ সড়কের উপর বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এসে ময়লা ফালাতো। এলাকাবাসির অভিযোগ পেয়ে পৌর মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়ার হস্তক্ষেপে ময়লা ফেলা বন্ধ করা হয়েছে। শীঘ্রই ময়লা- আবর্জনার স্তুপ অপসারণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর..

ফেসবুকে আমরা

Facebook Pagelike Widget