আজ ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২রা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

কুড়িগ্রামে গরুর শরীরে নতুন ভাইরাস

কুড়িগ্রামের উলিপুরে সর্বত্রই গবাদি পশুর ভাইরাসজনিত লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ রোগের নিদিষ্ট কোন প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন না থাকায় দ্রুত এক গরু থেকে অন্য গরুতে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে খামারি ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি গরু মারা যাওয়ারও খবর পাওয়া গেছে।

এ পরিস্থিতিতে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ আতঙ্কিত না হয়ে সচেতনতার পরামর্শ দিচ্ছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মশা-মাছির মাধ্যমে ভাইরাসজনিত লাম্পি স্কিন ডিজিজ আক্রান্ত গরুর শরীর প্রথমে ফুলে গুটি গুটি হয়। কয়েকদিন পর গুটিগুলো ফেটে রস ঝরতে থাকে। ফলে ফেটে যাওয়া স্থানেই ক্ষত সৃষ্টি হয়ে গরুর শরীরে প্রচণ্ড জ্বর এবং খাবার রুচি কমে যায়। জ্বরের সাথে নাক ও মুখ দিয়ে লালা বের হয়। আক্রান্ত গাভীর দুধ খেলে বাছুর সংক্রমিত হওয়ার আশংকা থাকে। সেই সাথে আক্রান্ত গরুতে ব্যবহার করা সিরিঞ্জ এবং গরুর পরিচর্যাকারীর কাপড়ের মাধ্যমেও ভাইরাসটি ছড়াতে পারে।

অভিযোগ উঠেছে, এ ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য বাজারে পেনিসিলিন জাতীয় ওষুধের সংকট থাকায় তা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে আক্রান্ত গবাদি পশুকে বাধ্য হয়ে সেফটি অ্যাক্সন জাতীয় এন্টিবায়োটিক বেশি দামে কিনে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে বলেও জানান পশু চিকিৎসকরা।

উপজেলার রামদাস ধনিরাম গ্রামের কৃষক রোস্তম আলী জানান, তার একটি গাভী ও ৩ টি বকনা বাছুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে একটি বাছুর মারা গেছে। আক্রান্ত গরুগুলো নিয়ে তিনি চরম দুশ্চিন্তায় ভুগছেন।

এছাড়াও উপজেলার তেতুলতলা গ্রামের নুর ইসলামের একটি গাভী, কালিরপাঠ গ্রামের জগদীশ চন্দ্র বর্মনের একটি গাভী, হোকডাঙ্গা গ্রামের ফজলুল হকের একটি ষাঁড়, নতুন অনন্তপুর গ্রামের সাজু মিয়ার একটি গাভী ও একটি বাছুর, গাবের তল গ্রামের মোকছেদ আলীর একটি বাছুর, মুন্সিপাড়া গ্রামের সুমন মিয়ার একটি গাভী, রাজবল্লভ গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের একটি ষাঁড় এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। উপজেলায় বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে। অন্তত কয়েকশ গরু লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত এসব গরুগুলো নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ভুগছেন বলেও জানান ভুক্তভোগী কৃষকরা।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও ভেটেরিনারি সার্জন তানভীক জাহান বলেন, ‘গবাদি পশুর ভাইরাসজনিত লাম্পি স্কিন ডিজিজ যেহেতু মশা-মাছি থেকে ছড়ায় সেজন্য আক্রান্ত গরু থেকে সুস্থ গবাদি পশুগুলো আলাদা করে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সেইসাথে গবাদি পশু থাকার জায়গা সবসময় শুকনো রাখাসহ মশারি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে খামারি ও কৃষকদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর..

ফেসবুকে আমরা

Facebook Pagelike Widget