ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কক্ষে বাবা-ছেলেকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ এরই মধ্যে তিনজনকে আটক করেছে। পেটানোর সময় যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তোলা হলেও নেপথ্যে রয়েছে সন্তান দত্তক না দেওয়া।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সালামতপুর গ্রামের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি (৪০) পাটকলে শ্রমিকের কাজ করেন। তাঁর এক ছেলে (১৩) ও এক মেয়ে (৯) রয়েছে। ছেলেটি অন্য একটি পাটকলে শ্রমিকের কাজ করে। তিনি পরিবার নিয়ে মাঝকান্দিতে ভাড়া বাসায় থাকেন। মেয়েটি আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। মেয়েটির মা নেই। ছেলেটির মা প্রবাসে থাকেন। বাবা সপ্তাহে পাঁচ দিন কাজের জন্য বাসার বাইরে থাকেন। গত ১৭ মার্চ স্থানীয়রা মেয়ের বাবা ও সত্ভাইকে খবর দিয়ে আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে যায়। চতুর্থ শ্রেণির কক্ষে আটকে কয়েকজন যুবক ও রূপা নামের এক তরুণী মিলে বাবা-ছেলেকে পেটায়। তাদের বিরুদ্ধে মেয়েকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তোলা হয়।
নির্যাতনের শিকার ওই ব্যক্তি জানান, মেয়েকে আড়ুয়াকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করার পর থেকে সহকারী শিক্ষক লিপি আক্তার পালিত সন্তান হিসেবে তাকে নেওয়ার পাঁয়তারা চালান। ওই শিক্ষক নিঃসন্তান। এ জন্য তাকে বিভিন্ন প্রকার প্রলোভন দেখানো হয়। দুই মাস আগে ওই শিক্ষক বাবাকে না জানিয়ে মেয়েটিকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে প্রায় সপ্তাহখানেক রাখেন। নির্যাতনের ঘটনার তিন দিন আগে মেয়েটিকে আবার বাড়িতে নিয়ে যান। পরিবার খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে জানতে পারেন শিক্ষকের ফরিদপুরের বাসায় রয়েছে। পরে শিক্ষককের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ১৭ মার্চ ছেলেসহ তাঁকে বিদ্যালয়ে যেতে বলেন। প্রথমে তিনি ছেলেকে বিদ্যালয়ে পাঠান। ছেলেকে আটকিয়ে রেখে তাঁকে যেতে বলেন। তিনি যাওয়ার পর কুতুব উদ্দিনসহ আসামিরা মেয়েকে স্ট্যাম্পে লিখে দিতে বলেন। তাঁদের কথায় রাজি না হওয়ায় বাবা-ছেলের ওপর তাঁরা নির্যাতন চালান।
তবে সহকারী শিক্ষক লিপি আক্তার তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।
মধুখালী থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম জানান, গত ১৭ মার্চ নির্যাতনের অভিযোগে ২০ মার্চ থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় কুতুবউদ্দিন, ফয়সাল, জহিরুলের নামসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
Leave a Reply